Press "Enter" to skip to content

‘‘জীবন খুবই সংক্ষিপ্ত, কিন্তু শিল্প এবং সেই কারণেই সঙ্গীত চিরস্থায়ী। প্রকৃত শিল্পের কোনও মৃত্যু নেই এবং সেটা সঙ্গীতের ক্ষেত্রেও সত্যি।’’- ভি বালসারা…।

Spread the love

জন্মদিনে স্মরণঃ ভি বালসারা

‘‘জীবন খুবই সংক্ষিপ্ত, কিন্তু শিল্প এবং সেই কারণেই সঙ্গীত চিরস্থায়ী। প্রকৃত শিল্পের কোনও মৃত্যু নেই এবং সেটা সঙ্গীতের ক্ষেত্রেও সত্যি।’’

[ ভি বালসারা ]

বাবলু ভট্টাচার্য : ভিয়েস্তাপ আর্দেশির বালসারা। শুধু বাঙালি নয়, সঙ্গীত- দুনিয়ার কাছে তিনি ‘ভি বালসারা’ নামে পরিচিত।

ভি বালসারার সঙ্গীত শিক্ষা তাঁর মায়ের কাছে। মা লঘুসঙ্গীত গাইতেন। আর বাবার ছিল টিউটোরিয়াল স্কুল। সেখানে ফ্রেঞ্চ, পার্সি, জার্মান-সহ সায়েন্স ও মিউজিকের ক্লাস হত। এই স্কুলেই ভায়োলিন, ম্যান্ডোলিন, পিয়ানো শেখানোর জন্য আলাদা আলাদা শিক্ষক আসতেন। প্রত্যেক ক্লাসে ছেলেকে পাঠিয়ে দিতেন ভিয়েস্তাপের মা।

এ ভাবে শুনতে শুনতেই ইন্সট্রুমেন্টের প্রতি একটা অনুরাগ জন্মায়। আস্তে আস্তে বিভিন্ন রকমের গ্লাস, শিশি, পাথর, ঘণ্টা, সাইকেলের বেল, টাইপরাইটারে তাল রাখা থেকে শুরু করে চাবি আছে এমন যে কোনও বাজনায় পারদর্শী হয়ে উঠলেন ভি বালসারা। ছ’ বছর বয়সে মঞ্চে প্রথম সঙ্গীত পরিবেশন করেছিলেন ছোট্ট ভিয়েস্তাপ।

তবে, প্রথম রবীন্দ্রসঙ্গীত বাজিয়েছিলেন ১৯৫৮ সালে, সেটাও মঞ্চে। গানটি ছিল ‘এ মণিহার আমায় নাহি সাজে’। এই গানটি তাঁর অতি প্রিয় গান, তাই কোনও সম্মাননা পেলেই গানটি বাজাতেন।

পনেরো বছর বয়সে বাড়ি থেকে কাজের জন্য পালিয়ে গিয়েছিলেন পুণেতে। সারা দিন কাজের চেষ্টায় ঘোরাঘুরির পরে রাতে ঘুমোতেন রেলের প্লাটফর্মে। সেখান থেকে কখনও পুলিশ এসে তাড়িয়ে দিলে কার্কি স্টেশনের শেডে রাখা কোনও ট্রেনের কাঠের বেঞ্চই হয়ে উঠত সে রাতের আশ্রয়।

হঠাৎ, এক দিন সকালে মাথায় এল, স্টেশনের কাছে মিলিটারি ক্যাম্পে গেলে হয়তো কাজ পাওয়া যেতে পারে। ক্যাম্পে গিয়ে দেখা করলেন। প্রত্যাশা মতো পেলেন ঘোড়াকে স্নান করানোর কাজ। কিন্তু এ সব বেশি দিন চলল না। ফের বাড়ি ফিরে গিয়ে পার্সি বিয়েবাড়িতে জ্যাজ সঙ্গীত বাজানো শুরু করলেন।

এই ছবিটি ১৯৯০ সালে কলকাতার রবীন্দ্র সদনে তোলা। শিল্পীর সাথে নিউজ স্টারডম এর মুখ্য সম্পাদক গোপাল দেবনাথ।

১৯৫৪ সাল। একত্রিশ বছর বয়সে কলকাতায় চলে এলেন ভিয়েস্তাপ বালসারা। কলকাতায় প্রথমে স্যুইন হো স্ট্রিটে থাকতেন তিনি। মুম্বইতে যে সব শিল্পীর গান শুনে ‘ইন্সট্রুমেন্ট’ বাজাতেন, তারা সকলেই কলকাতার শিল্পী। তখনকার দিনে ‘নিউ থিয়েটার্স’ স্টুডিও ছিল শীর্ষস্থানে। আর এখানে সেই শিল্পীরাও ছিলেন উপরের সারিতে— পঙ্কজকুমার মল্লিক, যূথিকা রায়, কাননদেবী, সুরকার কমল দাশগুপ্ত।

তাঁর বাজানো উল্লেখযোগ্য রবীন্দ্রসঙ্গীতগুলি— এসো এসো আমার ঘরে এসো, সর্ব খর্ব তারে দহে, মনে কি দ্বিধা রেখে গেলে চলে, দিনগুলি মোর সোনার খাঁচায়, খরবায়ু বয় বেগে, যদি তোর ডাক শুনে ইত্যাদি।

সম্মান: অল ইন্ডিয়া ক্রিটিক অ্যাসোসিয়েশন, আলাউদ্দিন খান পুরস্কার, এশিয়ান পেন্টস শিরোমণি, সায়ক পুরস্কার, ইন্দিরা গাঁধী পুরস্কার, রাজীব গাঁধী পুরস্কার, সত্যজিৎ রায় স্মৃতি স্মারক হিউম্যানিটি মিশন পুরস্কার, কমলাদেবী রাই পুরস্কার, সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি পুরস্কার, দেশিকোত্তম ও মোহর।

২৪ মার্চ ২০০৫ তিনি কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।

ভি (ভিয়েস্তাপ আর্দেশির) বালসারা ১৯২২ সালের আজকের দিনে (২২ জুন) মুম্বইতে জন্মগ্রহণ করেন।

ছবি সৌজন্যে – চিত্রপরিচালক প্রবীর রায় এবং চিত্রপরিচালক রাতুল গাঙ্গুলী।

More from EntertainmentMore posts in Entertainment »
More from InternationalMore posts in International »
More from MusicMore posts in Music »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.