Press "Enter" to skip to content

জীবনের সাথে জড়িয়ে আছে চৈত্র সেল, চরকের মেলা ও গাজন…..।

Spread the love

মতিলাল পটুয়া : কলকাতা, ১৩ এপ্রিল ২০২২। সেল — সেল — সেল দোকানদার হাঁকছে সেল — সেল –সেল চারশো টাকার মাল দুশো টাকায় , দেড়শো টাকার মাল মাত্র একশ টাকায়।
সেল সেল শব্দ শুনে আমি থমকে দাঁড়ায় । সত্যিইতো সারা বছরের বিক্রি শেষে যে সব দ্রব্য সামগ্রী হাজারো মানুষের স্পর্শের পর অবহেলায় দোকানে পরে থাকে বেশিমাত্রায় ছাড় দিয়ে সেগুলো অতি সত্বর বিক্রি করে ফেলাই বুদ্ধিমানের কাজ। এর প্রধান কারন নুতন বছরে দোকান নুতন করে মানুষের রুচিশীল জিনিসপত্র দিয়ে সাজাতে হবে ।
আমি যেন সেল শব্দে জীবন নাট্যের অন্তরালে হারিয়ে গেলাম । আরও পাঁচ জনের মতো আমাকেও চৈত্র সেলের মতো জীবনকে ঝাড়পোছ করে সাজাতে হবে । নতুন বছরে একদম নুতন জীবন ।
আবার ভাবছি জীবন কি সাজাতে হয় ?
না জীবন আপন খেয়ালে চলে , আপন খেয়ালেই গড়ে ওঠে । আমরা যে অর্বাচীন নরের মতো হাসি খেলি , জীবন ভাঙ্গি জীবন গড়ি । এই সবই পরম পুরুষের অঙ্গুলি হেলনে উঠি আর বসি ।
তিনি যে দুঃখ দিয়ে স্মরণে রাখেন আর আনন্দ দিয়ে দূরে সরিয়ে দেন কিন্তু আমরা তাঁর ইচ্ছাটাকে অনেকেই  উল্টো রূপে বুঝি ।
আমরা বারমাসে তেরপার্বন আর ছয় রিপুতে মজে থাকি। নিজেদের স্বার্থ সুখে বিভোর হয়ে যায় । জীবন কিন্তু চলতে থাকে কালের গতিতে । ডাক বাহি রানারের মতো ছুটেই চলেছে মানুষ , মানুষের স্বপ্ন ,আশা আকাঙ্ক্ষা ,অভিপ্রায়। কখনো তরাই
কখনো উত্তরায় ,কখনো সরল রেখায় ,কখনো সমান্তরালে । ছুটছে আর ছুটছে । ছুটেই চলেছে সেই আদি থেকে অনন্ত কাল ধরে ।
কখনো কখনও জেগে ওঠে যাযাবর মন । কখনও ছুটে যায় নদীপথে ,কখনো সমুদ্রে , কখনও পাহাড়ে, পাহাড়ি ঝর্ণায় । কখনও বা পর্বতের শৈল শিখরে, আবার কখনও বা পর্বত মালায় ।
কখনো গহন অরণ্যে , অরণ্য মালায় । কখনো
জনবহুল , কখনো জনহীন প্রান্তরে ।
কখনো একান্ত থেকে একান্তে , নিভৃতে নির্জনে ।
যখন নির্জনে হারায় মানুষ হয়ে ওঠে মৌন মুখর ।মৌনতার অন্তরালে পবিত্র ঐশীর পদ প্রান্তে জেগে ওঠে যেন জাগতিক অন্য কোন পবিত্র মন ।

মনের গহ্বরে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে দেখে ঐশ্বরিক স্বপ্ন । স্বপ্নালোক থেকে আনন্দলোকে হারায় নিজেকে । নিজের অস্তিত্বকে।  চৈত্রর শেষের দিকে বেজে ওঠে গাজনের ঢাক ।
ঢাক গুড়গুড় শব্দে মানুষের মন প্রাণ চড়কের
মেলায় ছুটে যায়। চৈত্র সেলের নুতন পোশাক পড়ে ছোট থেকে বড় সকলে । চড়কের মেলা থেকে মাঝে মাঝে গাজনের ভক্তদের চিৎকার ভেসে আসে জয় বাবা ধর্মরাজের জয়, জয় বাবা ভোলানাথের জয় । ধর্মরাজ কি জয় , ভোলা নাথ কি জয় ।
এই গাজন অনুষ্ঠানে কোথাও কোথাও বোলান নামের গানের দল আসে । নেচে নেচে ঘাড় ধরে বা কোমড় ধরে নেচে নেচে বোলান গান গেয়ে ওঠে– প্রথমে বন্দনা করি ভোলানাথের চরনে, তারপরে বন্দনা করি পার্বতির রাঙা পায় ……. । এরা নাট্যরূপ দিয়েও রসিকতার পালা করে।
এইভাবে আমাদের জীবন নাট্যও রসিকতা ,আনন্দ আর দুঃখের সাথে চলতে থাকে ।

More from CultureMore posts in Culture »
More from SocialMore posts in Social »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.