Press "Enter" to skip to content

জর্জ বার্নার্ড শ’ এমন ব্যক্তিত্ব যিনি যুগপৎ সাহিত্যে নোবেল (১৯২৫) এবং অস্কার (১৯৩৮) পুরস্কার লাভ করেন……….

Spread the love

—————–জন্মদিনে জর্জ বার্নার্ড শ’————-

বাবলু ভট্টাচার্য : কেউ বলেন, তিনি একজন মহান সামাজিক চিন্তক। তার চিন্তার মধ্যে ভবিষ্যৎ জীবনের বীজ অঙ্কুরিত হয়। পচাগলা সমাজের বিরুদ্ধে তিনি তীক্ষ্ণভাবে প্রতিবাদ জানান। তিনি আইরিশ নাট্যকার এবং লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্সের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা জর্জ বার্নার্ড শ’।উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের পর তিনিই হলেন সেরা ব্রিটিশ নাট্যকার। কেউ বলেন, তার মতো সাহিত্য সমালোচক বিশ্বে দুর্লভ। যে কোনো সাহিত্য সৃষ্টিকে তিনি সম্পূর্ণ নির্মোহ দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে সমালোচনা করতে পারেন। এক শিক্ষিত মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান ছিলেন জর্জ বার্নার্ড শ’। যিনি সমকালীন সমাজকে প্রচণ্ডভাবে প্রভাবিত করেছিলেন, তাকে তুলনা করা হয় মহান-চিন্তানায়ক ভলতেয়ারের সঙ্গে, ছোটবেলার দিনগুলো তার কেটেছিল কঠিন কঠোর নিয়মানুবর্তিতার মধ্যে। ছোট থেকেই শ’কে বলা হয়েছিল ভবিষ্যতে তোমাকে একজন কেউকেটা হতে হবে। এভাবেই বোধহয় শ’-এর মন ইস্পাত-কঠিন হয়ে ওঠে।

শ’-এর হাতে নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়েছিল ১৯২৫ সালে। বলা হয়েছিল যে, তিনি একদিকে যেমন আদর্শবাদের ধ্বজাকে ওপরে তুলে ধরেছেন, এরই পাশাপাশি চিরন্তন মানবিকতার জয়গান গেয়েছেন। অসাধারণ কৌতুকসম্পন্ন বাক্যবাণে বিদ্ধ করেছেন সবার অশান্ত হৃদয়কে। তার লেখনীর মধ্যে কাব্যিক সৌন্দর্য লুকিয়ে থাকত সবসময়। জর্জ বার্নার্ড শ’ ছিলেন হালকা-পাতলা গড়নের মানুষ। আর তার বন্ধু বিশ্বখ্যাত চিত্র পরিচালক আলফ্রেড হিচকক ছিলেন মোটা ও বিশাল ভুঁড়ির অধিকারী। একবার শ’-কে ঠাট্টা করে হিচকক বললেন, ‘তোমাকে দেখলে মনে হয় ইংল্যান্ডে দুর্ভিক্ষ চলছে।’

জবাবে শ’ বললেন, আর তোমাকে দেখলে বোঝা যায় দুর্ভিক্ষের কারণটা কী!’ জর্জ বার্নার্ড শ’ কাউকে অটোগ্রাফ দিতেন না। নিজের লেখা বইও কাউকে কখনো উপহার দেননি। তবে বিশ্বখ্যাত বাঙালি জগদীশচন্দ্র বসু ১৯২৮ সালে রয়েল সোসাইটির সভায় একটি ভাষণ দেন। সেই ভাষণ শুনে শ’ মুগ্ধ হয়ে যান। পরদিনই কয়েকটি বই নিয়ে তিনি জগদীশচন্দ্রের বাসায় গিয়ে হাজির। উপহারের বইগুলোতে শ’ লেখেন জীববিজ্ঞানে পণ্ডিত এক ব্যক্তিকে জীববিজ্ঞান সম্পর্কে অজ্ঞ এক ব্যক্তি উপহার দিলেন। তিনি সামাজিক বিভিন্ন ধরনের সমস্যাগুলো হাস্যরসের ছদ্মাবরণে অত্যন্ত দক্ষ শিল্পীর হাতে ফুটিয়ে তুলতে পারতেন। শিক্ষা, বিয়ে, ধর্ম, সরকার, স্বাস্থ্যসেবা এবং শ্রেণী-সুবিধাই ছিল জর্জ বার্নার্ড শ’র লেখার বিষয়বস্তু। অধিকাংশ লেখাতেই শ্রমজীবী মানুষের শোষণের বিপক্ষে তার অবস্থান ছিল সুস্পষ্ট। একজন কট্টর সমাজতান্ত্রিক হিসেবে ফ্যাবিয়ান সোসাইটির পক্ষে জর্জ বার্নার্ড শ’ অনেক বক্তৃতা দেন ও পুস্তিকা রচনা করেন।

বার্নার্ড শ’ এমন ব্যক্তিত্ব যিনি যুগপৎ সাহিত্যে নোবেল (১৯২৫) এবং অস্কার (১৯৩৮) পুরস্কার লাভ করেন। নোবেল পুরস্কার গ্রহণে অনাগ্রহ থাকলেও স্ত্রীর পীড়াপীড়িতে শেষ পর্যন্ত তা তিনি গ্রহণ করেন। তবে তিনি আর্থিক পুরস্কার নেননি।

জর্জ বার্নার্ড শ’ ১৮৫৬ সালের আজকের দিনে (২৬ জুলাই) আয়ারল্যান্ডের ডাবলিন শহরে জন্মগ্রহণ করেন।

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.