Press "Enter" to skip to content

জমিদার সন্তান হয়েও জমিদারী শান সৈকত-এর প্রতি বিন্দুমাত্র দৃষ্টি ছিল না হেমাঙ্গ বিশ্বাসের…..।

Spread the love

স্মরণ : হেমাঙ্গ বিশ্বাস

বাবলু ভট্টাচার্য : তিনি হলেন বাংলা গণসংগীতের পথিকৃৎ কণ্ঠশিল্পী এবং সুরকার। মূলত লোকসংগীতকে কেন্দ্র করে গণসংগীত সৃষ্টির ক্ষেত্রে তার অবদান মৌলিক ও সুদূরপ্রসারী।

হেমাঙ্গ বিশ্বাস হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার পশ্চিম মিরাশী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা হরকুমার বিশ্বাস একজন প্রতিষ্ঠিত জমিদার ছিলেন। জমিদার সন্তান হয়েও জমিদারী শান সৈকত-এর প্রতি বিন্দুমাত্র দৃষ্টি ছিল না হেমাঙ্গ বিশ্বাসের। ছেলেবেলা থেকেই অত্যন্ত মিশুক প্রকৃতির ছিলেন তিনি।

হবিগঞ্জ হাইস্কুল থেকে পাশ করার পর তিনি শ্রীহট্ট মুরারিচাঁদ কলেজে ভর্তি হন। সেখানে তিনি স্বাধীনতা আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। তিনি ১৯৩২ সালে কমিউনিস্ট পার্টির সংস্পর্শে আসেন। ১৯৩৫ সালে কারাবন্দী থাকাকালে তিনি যক্ষারোগে আক্রান্ত হন এবং সেই কারনে তিনি মুক্তি পান।

১৯৩৮-৩৯ সালে বিনয় রায়, নিরঞ্জন সেন, দেবব্রত বিশ্বাস প্রমুখের সাথে ভারতীয় গণনাট্য সংঘ বা আই.পি.টি.এ গঠন করেন। পঞ্চাশের দশকে এই সংঘের শেষ অবধি তিনি এর সাথে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন।

‘মাস সিঙ্গার্স’ নামে নিজের দল গঠন করে জীবনের শেষ দিকেও তিনি গ্রামে গ্রামে গান গেয়ে বেড়িয়েছেন। তিনি ‘কল্লোল’, ‘তীর’, ‘লাল লণ্ঠন’ প্রভৃতি নাটকের সংগীত পরিচালক ছিলেন। ‘লাল লন্ঠন’ নাটকে তিনি বিভিন্ন চীনা সুর ব্যবহার করেছিলেন।

বাংলা ও অসমিয়া ভাষায় তার লিখিত গ্রন্থ— ‘লোকসংগীত শিক্ষা’। তার কালজয়ী গানের মধ্যে রয়েছে— ‘শঙ্খচিলের গান’, ‘জন হেনরীর গান’, ‘মাউন্টব্যাটেন মঙ্গলকাব্য’, ‘বাঁচব বাঁচব রে আমরা’, ‘মশাল জ্বালো’, ‘সেলাম চাচা’, ‘আমি যে দেখেছি সেই দেশ’, ‘হবিগঞ্জের জালালী কইতর’ ইত্যাদি।

১৯৮১ সালের ৫ ও ৬ মার্চ তাকে ঢাকায় গণ সংবর্ধনা দেওয়া হয়। হাজার হাজার শ্রোতা তাকে ফুলে ফুলে রাঙ্গিয়ে দেয়। তার ঐতিহাসিক গণসংগীত ‘ঢাকার ডাক’ সকল শ্রোতাকে মন্ত্রমুগ্ধ ও অভিভূত করে। হবিগঞ্জেও তাকে সংবর্ধনা দেয়া হয়।

হেমাঙ্গ বিশ্বাস ১৯৮৭ সালের আজকের দিনে (২২ নভেম্বর) মৃত্যুবরণ করেন।

More from GeneralMore posts in General »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.