আ জ বি শ্ব চ ড়ু ই দি ব স
“বাবুই পাখিরে ডাকি বলিছে চড়াই,
কুড়ে ঘরে থেকে করো শিল্পের বড়াই !
আমি থাকি মহাসুখে অট্টালিকা পরে,
তুমি কত কষ্ট কর রোদ বৃষ্টি ঝড়ে।”
বাবলু ভট্টাচার্য : কারো আছে শিল্পের বড়াই, আবার কারো সে বড়াই নেই। থাকা আর না-থাকা দুটিই নির্ধারিত হচ্ছে মানুষের ভাষ্যে। মানুষের এই ভাষ্য জানান দিচ্ছে মানুষ আর প্রকৃতির মেলবন্ধনকে সে কীভাবে দেখে। এই মেলবন্ধন মানুষের প্রয়োজনেই গুরুত্বপূর্ণ। মানুষ তা কতটা বোঝে ? প্রকৃতিতে মানুষের অতি বেশি হস্তক্ষেপের ফলে বহু প্রাণী আজ বিপন্ন ৷ প্রকৃতির প্রতিটি প্রাণ ও পদার্থের উপস্থিতিতেই তার জন্য সুষম একটা অবস্থা বজায় থাকে।
চড়ুই পাখি নিয়ে কোনো স্মৃতি নেই এমন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ কমই আছেন। শহরের শিশুরা কতটা চেনে তা নিয়ে সংশয় আছে। তবে চড়ুইয়ের ডাক শোনেনি এমন শিশু নিশ্চয় নেই। এই সংশয় না থাকা দিনে মনে করিয়ে দিচ্ছি আজ বিশ্ব চড়ুই দিবস (World Sparrow Day)। ভালো থাকুক চড়ুইরা।
চড়ুই নিয়ে সাধারণত বলা হয়, এটি লোকালয়ের আশপাশে একটি সুপরিচিত পাখি। এরা জনবসতির মধ্যে থাকতে ভালোবাসে, তাই এদের ইংরেজি নাম হাউস স্প্যারো অর্থাৎ ‘গৃহস্থালির চড়ুই’। খড়কুটো, শুকনো ঘাস-পাতা দিয়ে কড়িকাঠে, কার্নিশে এরা বাসা বাঁধে। সমস্ত দিন এরা লাফিয়ে বেড়িয়ে মাটি থেকে পোকামাকড় শস্য খুঁটে খায়।
এই সুন্দর বর্ণনার বাইরে রয়েছে তার বিপন্নতার কাহিনী। তাই অতিমাত্রায় নগরায়ন ও জনসংখ্যার চাপে হারিয়ে যাওয়া চড়ুই ও অন্যান্য পাখি নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে ২০ মার্চ পালন করা হয় ‘বিশ্ব চড়ুই দিবস’ হিসেবে। ভারতের ‘নেচার ফরএভার সোসাইটি’ আন্তর্জাতিক এই উদ্যোগটি গ্রহণ করে। এর সঙ্গে আছে ফ্রান্সের ইকো-সিস অ্যাকশান ফাউন্ডেশনসহ বেশ কটি আন্তর্জাতিক সংগঠন।
নেচার ফরএভার সোসাইটির শুরু মোহাম্মদ দিলওয়ার নামের ভারতীয় এক সংরক্ষণবাদীর হাত ধরে।
দিলওয়ারকে টাইম ম্যাগাজিন ২০০৮ সালে ‘হিরোস অব দ্য এনভায়রনমেন্ট’ হিসেবে আখ্যা দেয়। দিলওয়ার নিজের অফিসের এক অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় চড়ুই দিবসের প্রস্তাব দেন। এরপর ২০১০ সাল থেকে দিনটি পালিত হয়ে আসছে।
এই দিনে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, সচেতনতামূলক প্রচারণা, চড়ুইয়ের গুরুত্ব এবং সৌন্দর্য নিয়ে মিডিয়া ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে আলোচনা হয়ে থাকে। এ ছাড়া পরিবেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ‘স্পারো অ্যাওয়ার্ড’ দেয়া হয় এই দিবস উপলক্ষে।
Be First to Comment