বাবলু ভট্টাচার্য : প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক মারা গেছেন। আজ (সোমবার) রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাজশাহীর নিজ বাসায় বার্ধক্যজনিত কারণে তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।
হাসান আজিজুল হক ১৯৩৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি বর্ধমান জেলার যবগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
১৯৫৪ সালে যবগ্রাম মহারানী কাশীশ্বরী উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও ১৯৫৬ সালে খুলনার দৌলতপুরের ব্রজলাল কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন তিনি।
যৌবনের শুরুতেই প্রগতিশীল রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন হাসান আজিজুল হক। রাজনীতি করার কারণে পাকিস্তান সরকারের রোষানলে পড়তে হয় তাকে। পরে তিনি ভর্তি হন রাজশাহী কলেজে।
১৯৫৮ সালে এই কলেজ থেকে দর্শনশাস্ত্রে সম্মানসহ স্নাতক ডিগ্রি লাভ করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৬০ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৭৩ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন বিভাগে অধ্যাপনা করেন।
হাসান আজিজুল হকের শুরু ১৯৬৪ সালে— ‘সমুদ্রের স্বপ্ন শীতের অরণ্য’র মধ্য দিয়ে। এর চার বছরের মাথায় তার ‘আত্মজা ও একটি করবী গাছ’ গল্পগ্রন্থটি প্রকাশিত হয়।
হাসান আজিজুল হকের উল্লেখযোগ্য রচনাগুলোর মধ্যে রয়েছে- ‘আত্মজা ও একটি করবী গাছ’, ‘জীবন ঘষে আগুন’, ‘পাতালে হাসপাতালে’, ‘নামহীন গোত্রহীন’, ‘চালচিত্রের খুঁটিনাটি’, ‘মা মেয়ের সংসার’, ‘বিধবাদের কথা ও অন্যান্য গল্প’, ‘সক্রেটিস’, ‘বৃত্তায়ন’, ‘শিউলি’, ‘আগুনপাখি’, ‘ফিরে যাই ফিরে আসি’, ‘উঁকি দিয়ে দিগন্ত’ প্রভৃতি।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক বইয়ের মধ্যে রয়েছে- ‘একাত্তর : করতলে ছিন্নমাথা’, ‘লাল ঘোড়া আমি’, ‘ফুটবল থেকে সাবধান’ ইত্যাদি। সম্পাদিত বইয়ের মধ্যে রয়েছে- ‘গোবিন্দচন্দ্র দেব রচনাবলী’, ‘একুশে ফেব্রুয়ারি গল্প সংকলন’, ‘জন্ম যদি তব বঙ্গে’ ইত্যাদি।
সাহিত্যে অবদানের জন্য হাসান আজিজুল হক ১৯৭০ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পান। এছাড়া ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে একুশে পদকে এবং ২০১৯ সালে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করে।
Be First to Comment