গাব ফল??
সুস্মিতা দাস : কলকাতা, ৬, সেপ্টেম্বর, ২০২০। গত সপ্তাহে ডেউয়া ফলের পোস্টে অনেকেই ডেউয়া ফলকে গাব ফল বলে সম্বোধন করছেন।ডেউয়া ও গাব ফল সম্পূর্ণ আলাদা। তাই এই সপ্তাহে গাব ফল সম্পর্কে কিছু তথ্য জানাতে চাই। গাব ফল আগে প্রচুর পাওয়া যেত, তবে এখন সচরাচর চোখে পড়ে না। আমাদের দেশে দুই রকম গাবফল দেখতে পাওয়া যায়। প্রজাতি সম্পূর্ণ আলাদা।বিলাতি গাব ও দেশি গাব।
বিলাতি গাব ফল??
বিলাতি গাব ফল খুব সুস্বাদু ও মিষ্টি। এর বৈজ্ঞানিক নাম Diospyros discolor. এর আদিবাস ফিলিপাইনে। ইংরেজিতে একে Velvet Apple ও বলা হয়। বিলাতি গাব গাছ অনেক উঁচু হয়। বিলাতি গাব ফল পাকতে শুরু করে চৈত্র মাস থেকে। এই ফল পাকলে গাঢ় লাল রঙের হয়।ফলের ভেতরটা সাদা। ফলটি গোলাকার ও উপরের খোসা মখমলের মত। বিলাতি গাব ফলের ওজন ১০০ গ্রাম থেকে ৫০০ গ্রাম হতে পারে।ফলটির প্রচুর জনপ্রিয়তা রয়েছে।
পুষ্টিগুণ??
এই ফলে রয়েছে প্রোটিন,ফ্যাট,ক্যালসিয়াম,শর্করা,ভিটামিন -এ,সি,আয়রন, থায়ামিন,সোডিয়াম, পটাশিয়াম,ফসফরাস।
উপকারিতা??
কাঁচা ও পাকা ফল ডায়বেটিস রোগীর জন্য উপকারী।
এই গাছের ছাল আমাশয় ও পেটের রোগে উপকারী। শারীরিক দুর্বলতা কাটাতে এই ফল ভীষণ উপকারী।
ওজন কমাতেও সহায়ক।
একজিমা ও চর্মরোগে বিশেষ উপকারী।
হৃদযন্ত্রের কার্যকারীতা বাড়াতে সহায়ক।
দেশিগাবফল??
দেশি গাবের বৈজ্ঞানিক নাম Diospyror Malabarica.এই গাছ একটি সপুষ্পক উদ্ভিদ।দেশি গাব গাছের আদি নিবাস দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া।এই গাছ অনেক বছর বেঁচে থাকে এবং ধীর গতিতে বাড়ে।দেশি গাব গাছের কান্ড কালচে রঙের হয়। এই গাছ লম্বায় ৩৫ মিটার হতে পারে। এই গাছে পোকা ধরে না।এই ফল গোলাকার ও উপরের আবরণ মসৃণ হয়।দেশি গাব ফলের স্বাদ হালকা মিষ্টি ও কষযুক্ত। কাঁচা ফল সবুজ ও পাকলে হলুদ পরে কমলা বর্ণ ধারণ করে। পাকা ফলের ভেতরটা আঠালো ও চটচটে হয়ে থাকে।
ব্যবহার??
দেশি গাব ফল সাধারণত খাওয়া যায় না।ভেষজ চিকিৎসায় এর ছাল ও কাঁচা ফল ব্যবহার করা হয়।এই ফলের থেকে ট্যানিন জাতীয় আঠা পাওয়া যায়।বাংলায় কথা আছে না “যা গাব জ্বাল দে”। হ্যা সেই আঠা- যা নৌকা, জাল ও পশুর চামড়ায় মাখানো হয়।তাতে এই সব দ্রব্য টেকসই হয়,জলে নষ্ট হয় না।এটাই গাবের প্রধান ব্যবহার।এছাড়াও কাপড়ে কালো রঙ করতে ব্যবহার করা হয়।
ছবি ~ গুগল থেকে সংগ্রহ করা।
Be First to Comment