শ্রীজিৎ চট্টরাজ: কলকাতা, ৭ ডিসেম্বর ২০২১। গত ৩ ডিসেম্বর শুক্রবার কলকাতার প্রেসক্লাবে টুডে শাইন প্রাইভেট লিমিটেডের এক সাংবাদিক সম্মেলনে তাদের নতুন ছবি অনুরাগ এর ট্রেলার ও পোস্টার মুক্তি ঘটালো। ২০১৫ সালে চাকরির ফাঁদে ছবি দিয়ে এই সংস্থার পথচলা শুরু। ২০১৭ তে এই সংস্থার দ্বিতীয় ছবি ছিল দৃষ্টি।
চলতি বছরের শেষে ৩৫ মিনিটের ছবি অনুরাগ নির্মাণ করলেন কাহিনীকার, চিত্রনাট্য ,সংলাপ রচনাকার ও পরিচালক ডা: শান্তনু সিনহা। পরিচালকের আর এক পরিচয় তিনি ফিলোজফি ইন সোশ্যাল ওয়ার্ক এ ডক্টরেট করে প্রতিনিয়ত সমাজসেবা মূলক কাজে নিয়োজিত থাকেন।
সাংবাদিক সম্মেলনে হাজির ছিলেন ছবির মুখ্য চরিত্রের শিল্পী ও কলাকুশলীরা। ছিলেন দেবদূত ঘোষ, আনন্দ শঙ্কর চৌধুরী, প্রিয়াঙ্কা ভট্টাচার্য প্রমুখ।
ছবির ট্রেলার দেখে বোঝা গেল , স্বামী ব্যবসার মূলধন পেতে নিজের স্ত্রীকে জনৈক ধনীর বিছানায় পাঠিয়ে দেন। তারপর? ক্লাইম্যাক্স এর জন্য অপেক্ষা করতে হবে ছবি মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত। তবে পরিচালক জানালেন, প্রেম শাশ্বত। প্রেম মহান। কোনও মূল্যেই প্রেমের সওদা হয় না। অস্বীকার করার উপায় নেই শিল্পে সাহিত্যে, নাটকে সিনেমায় প্রেমের মহানতাকে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে যুগে যুগে। আবার এটাও সত্যি যে, রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, প্রেম, সে যে ত্যাগেরই সাধনা। তিনি প্রেমকে স্থান দিয়েছেন ঈশ্বরের আসনে। কিন্তু বাস্তবে প্রেম কি এতই মহান?
বিজ্ঞান বলে, প্রেম আসলে জীবের মস্তিষ্কে অক্সিটোসিনের ক্ষরণের ফসল। ব্যক্তি বিশেষের বাহ্যিক ও মানসিক অবস্থার বিকাশের বিষয়গুলি যখন বিপরীত লিঙ্গের মনস্তত্ত্বে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সমর্থন যোগায়, তখন তা প্রেম নামে অভিহিত হয়। তবে সমলিঙ্গেও প্রেম পারস্পরিক বন্ধন গড়ে তোলে। বৈজ্ঞানিকরা গবেষণা করে দেখেছেন, প্রেম কোনও ঐশ্বরিক বিষয় নয়। আমেরিকার সান্ডিয়াগোতে সক ইনস্টিটিউট ফর বায়োলজিকাল স্টাডিজের বিজ্ঞানী সাইমন লিভে মৃত মানুষের মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস নামের অংশ পরীক্ষা করে বলেন, দুটি মানুষের আকর্ষণের রসায়নের তারতম্যে প্রবণতার ও পারস্পরিক দায়বদ্ধ থাকার অনুপাত নির্ভর করে। এই ফারাক মেলে মস্তিষ্কের ইন্টারস্টিশিয়াল নিউক্লিয়ার অব দ্য অ্যান্তেরিও হাইপোথ্যালামাস থ্রি, যা আইনা থ্রি নামে পরিচিত অংশে। ব্যক্তি স্বার্থে ,অস্তিত্বের সংকটে মানুষ প্রেমকে বিসর্জন দিয়েছে এমন উদাহরণও রয়েছে ভুরিভুরি। যে রবীন্দ্রনাথ প্রেমের বহমান প্রতীক, সেই তিনিই বলেছেন, যাকে তোমরা ভালোবাসা বলো, সেরকম করে আমি কোনোদিন কাউকে ভালোবাসিনি। বন্ধুবান্ধব, সংসার, স্ত্রী পুত্র, কোনও কিছুই আমি তেমন করে আঁকড়ে ধরিনি। ভিতরে একজায়গায় আমি নির্মম। তাই আজ যে জায়গায় এসেছি সেখানে আসা আমার সম্ভব হয়েছে, তা যদি না হতো, যদি জড়িয়ে পড়তুম তাহলে আমার সব নষ্ট হয়ে যেত। সুতরাং এই সাহসী জবানবন্দি দেওয়ার বুকের পাটা না থাকলেও ব্যক্তি জীবনে প্রেমকে বাজি অনেকেই রেখেছেন। রাখবেন। সাফল্যের সংজ্ঞা কে কি ভাবে দেবেন সেটা আপেক্ষিক। তবে জনপ্রিয়তার নিরিখে প্রেম সাহিত্যে, শিল্পে, নাটকে চলচ্চিত্রে এক আবেগীয় সম্পদ হিসেবেই বিবেচিত হয়।কিন্তু স্বার্থপরতা যে বিবর্তনের সঙ্গী সেতো সব দেশেই সর্বকালে প্রমাণিত।
Be First to Comment