Press "Enter" to skip to content

“কবিগুরুর প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি” — ১২টা ৩০ মিনিট, সব স্তব্ধ হয়ে গেলো। মধ্যাহ্নে অস্তমিত হলেন সূর্য। বাইশে শ্রাবণ হয়ে গেলো ইতিহাস……….

Spread the love

ডঃ বিবেকানন্দ চক্রবর্তী : রবীন্দ্র গবেষক, ৭, আগস্ট, ২০২০। আজ বাইশে শ্রাবণ, ১৪২৭।
আমাদের হৃদয় দেবতা কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রয়াণ দিবস।
বাইশে শ্রাবণ, ১৩৪৮ সালের বেলা ১২টা ৩০ মিনিটে কবি প্রয়াত হয়েছিলেন। সেদিন সকাল থেকে ঠাকুর বাড়িতে ভারাক্রান্ত পরিবেশ।
সকালবেলা অমিয়া ঠাকুর কিছু চাঁপাফুল অঞ্জলি ভরে এনে সাদা শালে ঢাকা পা দু’ খানির উপর ছড়িয়ে দিলেন। সকাল ৭ টায় এলেন রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়। খাটের পাশে দাঁড়ালেন, মন্ত্র পাঠ করলেন। পায়ের কাছে বসে বিধুশেখর
শাস্ত্রী মন্ত্র পড়লেন- ওঁ পিতা নোসি, পিতা নো বোধি, নমস্তেস্তু,মা মা হিংসী……..
অমিতা ঠাকুর কবির মুখে জল দিলেন। প্রথমে চামচে,পরে তুলো ভিজিয়ে। রবীন্দ্রনাথ
হঠাৎ কেঁপে কেঁপে উঠলেন। ডাঃ জ্যোতিষচন্দ্র রায় নাড়ি ধরে বসে আছেন। অমিতা ঠাকুর গুরুদেবের কানের কাছে উচ্চারণ করলেনঃ শান্তম- শিবম- অদ্বৈতম। এলেন চীনা অধ্যাপক তান য়ুন শান। পাশে বসে মালা জপতে লাগলেন। এলেন হেমন্তবালা দেবী, সন্নাসিনী বেশে। কবিগুরুর
মাথায়- কপালে তুলসীর মালা গঙ্গামাটি ছুঁইয়ে চলে গেলেন। ডাঃ অমিয় সেন এসে নাড়ি দেখলেন। মন্ত্রপাঠ চলছে সমানে। ঠিক বেলা ৯ টায় অক্সিজেন দেওয়া শুরু হলো। কিছুটা স্বস্তি যেন পেলেন। কিছুক্ষণ বাদে কোরামিন ইঞ্জেকশন দেওয়া হলো। বেলা ১১ টার পর থেকে পায়ের উষ্ণতা কমছে।
বাইরের বারান্দা থেকে ভেসে আসছে গানঃ
‘ কে যায় অমৃতধামযাত্রী/ আজি এ গহন তিমিররাত্রি / কাঁপে নভ জয়গানে ‘
মন্ত্র চলছে, শান্তম- শিবম- অদ্বৈতম।
দুপুর ১২ টা, পা আরো ঠান্ডা, হৃদস্পন্দনের গতি কমছে,সবাই উদবিগ্ন। চোখের জল আর বাঁধ মানছে না।
১২টা ৩০ মিনিট, সব স্তব্ধ হয়ে গেলো।
মধ্যাহ্নে অস্তমিত হলেন সূর্য। বাইশে শ্রাবণ
হয়ে গেলো ইতিহাস। আমরা হারালাম সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ কে।
আজ তাঁর প্রয়াণ দিবসে আমার বিনম্র প্রণতি কবিগুরুর উদ্দেশ্যে।

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.