বিশেষ প্রতিনিধি : কলকাতা, ৩১ অক্টোবর ২০২৪। শতাব্দীর শিক্ষা ঐতিহ্য উদযাপন করে খিদিরপুরের সেন্ট থমাস স্কুল, দেশের অন্যতম প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সম্প্রতি বার্ষিক উৎসব ফেস্টহোমা ২০২৪-এর আয়োজন করেছে। ১৭৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এই খ্যাতনামা কলকাতার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি এই বিশাল উৎসবে পশ্চিমবঙ্গের ৩৪টি স্কুলের শিক্ষার্থীদের আমন্ত্রণ জানিয়ে একটি বৃহৎ স্কুল ফেস্টের আয়োজন করেছে।
গত ৪০ অক্টোবর বুধবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে সেন্ট থমাস স্কুলের বয়েজ সেকশনের প্রিন্সিপাল সুমন বিশ্বাস এবং গার্লস সেকশনের প্রিন্সিপাল রিচেল আলায় এই উৎসবের বিশেষত্ব ও লক্ষ্যের কথা জানান। ফেস্টহোমা ২০২৪-এ ৩৮টিরও বেশি ইভেন্ট আয়োজন করা হয়েছে, যেখানে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিভা প্রদর্শনের সুযোগ পেয়েছে। এই বিস্তৃত ইভেন্টের সারি এই উৎসবকে রাজ্যের অন্যতম বৃহত্তম স্কুল ফেস্ট হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
এদিনের প্রধান আকর্ষণ ছিল বিখ্যাত বলিউড গায়ক জাভেদ আলী, যার সঙ্গীত পরিবেশনা বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত ছিল। আলীর উপস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রচুর উৎসাহ সৃষ্টি হয়। “শিক্ষার্থীদের মধ্যে জাভেদ আলীর পারফরমেন্স নিয়ে প্রবল উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেল,” বলেন সুমন বিশ্বাস। “প্রত্যেক শিক্ষার্থীর মধ্যে কোনো না কোনো প্রতিভা রয়েছে, এবং ফেস্টহোমা ২০২৪ এর মাধ্যমে আমরা সেই প্রতিভাগুলিকে উদযাপন করছি।”
উৎসবে গান, নাচ, নাটক, শিল্পকর্ম, এবং খেলাধুলাসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক ও অপ্রতিযোগিতামূলক ইভেন্ট অন্তর্ভুক্ত ছিল। অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের প্রতিভা সকলকে মুগ্ধ করেছে, বিশেষ করে বিচারকদের। গার্লস সেকশনের প্রিন্সিপাল রিচেল আলায় শিক্ষার্থীদের জন্য এমন একটি আয়োজনের মূল্য বোঝাতে গিয়ে বলেন, “এই ধরনের একটি উৎসব শিক্ষার্থীদের মানসিক ও সামাজিক বিকাশে বিশেষ ভূমিকা রাখে।”
বর্তমানের কড়া পাঠ্যক্রমে শিক্ষার্থীদের উপর প্রচুর চাপ পড়ে, যার কারণে তারা নিজেদের সৃজনশীল প্রতিভা প্রকাশের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়। ফেস্টহোমা ২০২৪ এর মাধ্যমে স্কুলটি এই চাপ কিছুটা কমাতে চেষ্টা করেছে, যাতে শিক্ষার্থীরা সৃজনশীলতায় মেতে ওঠে এবং নিজেদের প্রতিভাকে বিকশিত করতে পারে। দুই প্রিন্সিপালই শিক্ষার্থীদের প্রতিভা দেখে অভিভূত হন এবং জানিয়েছেন, উৎসবটি যেভাবে সফল হয়েছে, তাতে আমাদের লক্ষ্য পূর্ণ হয়েছে।
ফেস্টহোমা ২০২৪ এর সমাপ্তি স্মরণীয় অভিজ্ঞতা ও প্রেরণা হিসেবে শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং অভিভাবকদের মনে স্থান করে নিয়েছে। বিদ্যালয়ের এই বার্ষিক ঐতিহ্য শুধুমাত্র তাদের ঐতিহ্যকেই সম্মানিত করে না বরং আগামী প্রজন্মকে উৎকর্ষের পথে এগিয়ে যেতে উদ্বুদ্ধ করে।
Be First to Comment