প্রবীর রায় : প্রযোজক, পরিচালক ও অভিনেতা। কলকাতা, ২০ জুলাই, ২০২৫। খুব গাড়ির শখ ছিল উত্তমকুমারের। নিত্যনতুন গাড়ি কেনার এবং চড়ার একটা হবি ছিল তাঁর।
জীবনে প্রথম গাড়িটি কেনেন পঞ্চাশের দশকের গোড়ার দিকে। কালো রঙের অস্টিন অফ ইংল্যান্ড টুডোর। এই গাড়ি কেনবার পর একদিন শুটিং থেকে ফিরে, স্ত্রী গৌরী দেবীকে পাশে বসিয়ে, দুজনে মিলে আউট্রাম ঘাটে বেড়াতে যান। এরকম ভাবে প্রায়ই যেতেন, আর ওখানে ফাঁকা রাস্তায়, গৌরীকে গাড়ি চালানো শেখাতেন।
একদিন এক সন্ধ্যায়, সদ্য সদ্য গাড়ি চালানো শেখা গৌরী, কাঁচা হাতে গাড়ি চালাতে গিয়ে, বেসামাল হয়ে এক চানা-বাদামওয়ালাকে ধাক্কা মেরে তার জিনিসপত্র সব উল্টে দেন। তাই নিয়ে গন্ডগোল বেঁধে যায়। পুলিশ এসে পড়ে এবং উত্তম ও গৌরীকে থানায় ধরে নিয়ে যায়। তখনও উত্তমকুমারের সেরকম নাম হয়নি। পুলিশকে অনেক অনুনয়-বিনয়-অনুরোধ করেও কোনও কাজ হয়নি। উত্তমের সঙ্গে লাইসেন্সও ছিল না। সুতরাং উত্তম-গৌরী দুজনকেই লকআপে পুরে দেওয়া হয়। দুজনেই হেস্টিংস থানায় একরাত্রি হাজত বাস করেন। পরের দিন খবর পেয়ে বন্ধুরা এসে দুজনকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়।
এরপর উত্তম কেনেন স্টিল কালারের অস্টিন সামারা সেট। তারপর খ্যাতি আরও বাড়বার পর, আরও নাম-ডাক হবার পর কেনেন বিখ্যাত ডজ গাড়ি। এর উপরের দিকটা ছিল ক্রিমরঙের, তলার দিকটা গোলাপী। এই গাড়িটি উত্তমের বিশেষ প্রিয় ছিল। এরপর ষাটের দশকের গোড়ায় কিনলেন সবুজ রঙের রাম্বলার গাড়ি। এই গাড়িটি ছিল খুব দামি বিদেশি গাড়ি। তখনকার দিনে গাড়িটিতে এ.সি. ছিল। এরপর গাঢ় নীলরঙের ইমপালা কেনেন। এর কিছুদিন পর কিনলেন আইভরি ব্ল্যাক রঙের আমেরিকান ওল্ডস মোবাইল। তারপর কিনলেন কালো রঙের মরিস অক্সফোর্ড।
এই গাড়িটি বেশ কিছুদিন চড়বার পর আর বিদেশী গাড়ি কেনেননি। এরপর থেকে সাদা রঙের অ্যাম্বাসেডর চড়তেন।
সেই গাড়িটার নম্বর ছিল WMC 8787, উনি চলে যাওয়ার পর যে গাড়িটা বাড়ির সামনে পড়ে পড়ে টিনের খোলা হয়ে গেলো !




















Be First to Comment