মোল্লা জসিমউদ্দিন : কলকাতা, ইন্টারভিউ চলাকালীন অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করলো কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। গত ২০ জুলাই এই মামলার শুনানি পর্বে এই নির্দেশিকা জারি করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। তবে হাইকোর্ট জানিয়েছে – ‘ উচ্চপ্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে ইন্টারভিউ চলবে,তবে কারও নিয়োগ করা যাবেনা’।ইন্টারভিউ পর্ব মিটলে মেধাতালিকা প্রকাশ করতে হবে।সেইসাথে তথ্য ভান্ডার গড়তে হবে উচ্চপ্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে পরীক্ষার্থীদের নাম্বার সহ অন্যান্য বিষয় গুলি নিয়ে। স্বভাবতই খুশি মামলাকারীরা। রাজ্যে ফের শিক্ষক নিয়োগে দেখা গেল আইনী জট।চলতি সপ্তাহেই উচ্চপ্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে ইন্টারভিউ শুরু করতে চলেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। গত ১৯ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে এই ইন্টারভিউ, শেষ হবে আগামী ৪ আগস্ট। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু একথা জানিয়েছিলেন। কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশ ছিল ৩১ জুলাইয়ে মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। তাই গত ১৯ জুলাই থেকেই অনলাইন পদ্ধতিতে ইন্টারভিউ শুরু হয়েছে। শেষ হবে আগামী ৪ আগস্ট। মারণ ভাইরাস করোনার বাড়বাড়ন্ত রয়েছে, তাই অনলাইনে চলবে এই ইন্টারভিউ। স্কুল সার্ভিস কমিশনের হেল্পলাইন গুলি হলো ৯০৫১১৭৬৪০০,৯০৫১১৭৬৫০০,৯৮৩০৪৫০২১৮,৯৮৩০৪৫৪২১৯। এছাড়া ওয়েবসাইট টি হলো www.westbengalssc.com।১৪,৩১৯ টি শুন্যপদের জন্য এসএসসি ১৫,৪০৬ জনের মেধাতালিকা প্রকাশ করেছে।একদিকে কলকাতা হাইকোর্টে আইনী লড়াই জারি রাখা, আবার অন্যদিকে সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশিকা অনুযায়ী লিখিত অভিযোগ জমা দেওয়া শুরু করেছিলেন বিক্ষুব্ধ চাকরিপ্রার্থীরা।গত সপ্তাহে রীতিমতো লাইন দিয়ে সল্টলেকের এসএসসি ভবনে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া শুরু করেছেন বিক্ষুব্ধ চাকরি প্রার্থীরা।বেশিরভাগ অভিযোগই অনিয়ম এবং দুর্নীতির বলে জানা গেছে।ফের আইনী জটে আটকে উচ্চপ্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া। গত সপ্তাহে কলকাতা হাইকোর্টে গত সপ্তাহে সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশ কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দাখিল হয়েছে আপিল পিটিশন টি।আজ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং সৌগত ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি চলে । উচ্চপ্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে একাংশ পরীক্ষার্থী সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশিকা কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চের দারস্থ হয়েছেন।এসএসসির তরফে মেধাতালিকা টি অস্বচ্ছ বলে দাবি মামলাকারীদের।গত সপ্তাহে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সবুজ সংকেত পেয়ে উজ্জীবিত হয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু প্রতিবছর শিক্ষক নিয়োগে যে ঘোষণা দিয়েছিলেন। তা ফের আটকে গেল আইনী জটে।আর এই জট টানা পাঁচ বছর থমকে রেখেছে পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়াটাকেই।গত সপ্তাহে রাজ্য সরকারের মিলেছিল আইনী স্বস্তি, দীর্ঘ ৫ বছর থমকে থাকা উচ্চপ্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করার নির্দেশিকা জারি করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট এর সিঙ্গেল বেঞ্চ। ওইদিন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে উঠেছিল এই মামলা।সেখানে আগেকার অন্তবর্তী স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছিল।প্রসঙ্গত গত সপ্তাহে এসএসসি র তরফে উচ্চপ্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে মেধাতালিকা প্রকাশিত করা হয়েছিল পরীক্ষার্থীদের নাম্বার সহ।তা গত সপ্তাহে আদালতে জমা দেয় রাজ্য।এই মেধাতালিকা দেখে সন্তুষ্ট হয়েছিল হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ। মার্কশীট নিয়ে অতিরিক্ত চার্জশিট দাখিল হয়েছিল। তবে তা বিচারপতি গ্রহণ করেননি।মামলায় তিনি জানিয়েছিলেন – ‘ ৫ বছর ধরে নিয়োগ প্রক্রিয়া থমকে রয়েছে। আমি চাইনা নিয়োগে আরও দেরি হোক’। পাশাপাশি বিচারপতি রাজ্যের কাছে অনুরোধ রেখেছিলেন যে – ‘২০১৬ সালে যারা পরীক্ষায় আবেদন করেছিল, তাদের অনেকেরই বয়স পেরিয়ে গেছে। তাই তাদের বয়সে ৫ বছর ছাড় দেওয়া হোক’। গত সপ্তাহে কলকাতা হাইকোর্টের তরফে উচ্চপ্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে আদেশনামায় উল্লেখ ছিল যে – ‘ তালিকায় ভূল থাকলে তা পরীক্ষার্থীরা এসএসসি কে দু সপ্তাহের মধ্যে জানাতে পারে।সেই অভিযোগ এসএসসি খতিয়ে দেখবে আট সপ্তাহের মধ্যে। এরপর আবেদনকারী পরীক্ষার্থীদের চিঠি/ ইমেল করবে এসএসসি। পুরো প্রক্রিয়া টি শেষ করতে হবে বারো সপ্তাহের মধ্যে’। পাশাপাশি এসএসসি অভিযোগ খতিয়ে দেখতে বিশেষ আধিকারিক নিয়োগ করতে পারে এবং কোন পরীক্ষার্থী তথ্য ভূল দিয়ে অভিযোগ পাঠালে এসএসসি জরিমানা আদায় করার নির্দেশও দিতে পারবে বলে জানিয়েছিল আদালত। ২০১৯ সালের ১ অক্টোবর কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ কেন কার্যকর করেনি এসএসসি, তা নিয়েও উঠে বিস্তর প্রশ্নচিহ্ন। গত পাঁচবছরে মামলার বেড়াজালে উচ্চপ্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে সফল হতে পারেনি রাজ্য সরকার। অভিযোগ, অনিয়মের কারণেই এই আইনী জটিলতা এসেছিল। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে জারি করা হয়েছিল উচ্চপ্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে অন্তবর্তী স্থগিতাদেশ। এরফলে আটকে যায় ১৪ হাজার ৩৩৯ জনের নিয়োগ প্রক্রিয়া। যা নিয়ে ওইদিনই বিকেলে এসএসসির তরফে বসে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক। চলতি উচ্চপ্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দাখিল হয়েছিল বেশ কয়েকটি মামলা।গত সপ্তাহে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদে উচ্চপ্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে ইন্টারভিউ তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এবং পুজোর আগেই ১৪,৩৩৯ জন শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করা হবে বলে জানানো হয়েছিল।তবে ইন্টারভিউ তালিকায় নুন্যতম কত নাম্বার পেলে ডাক মিলছে তা ছিল অস্পষ্ট। তাই পরীক্ষার্থীদের একাংশ আইনজীবী ভীষক ভট্টাচার্য, ফিরদৌস শামিমদের হাত ধরে ইন্টারভিউ তালিকায় স্বচ্ছতা আনতে মামলা দাখিল করেছিলেন। সেখানে পরীক্ষার্থীদের অনেকেই বেশি নাম্বার পেয়েও ডাক পাইনি।সেই তথ্য তুলে ধরা হয় আদালতের কাছে। তখন আদালত উচ্চপ্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে অন্তবর্তী স্থগিতাদেশ জারি করেছিল। গত ২১ জুন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বচ্ছতা রেখে রাজ্যে ২৪ হাজার শিক্ষক নিয়োগে নির্দেশ দেন।সেইসাথে পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া পুজোর আগেই শেষ করবার কথা ঘোষণা করে ছিলেন।সেইমতন গত সপ্তাহে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ ইন্টারভিউ তালিকা প্রকাশ করে থাকে। তবে এই ইন্টারভিউ তালিকা প্রকাশে কিসের ভিক্তিতে হয়েছে তা স্পষ্ট হয়নি । তাই নুন্যতম কত নাম্বার পেলে ইন্টারভিউ তালিকায় নাম উঠবে এবং বেশি নাম্বার পেয়েও কেন ডাক মিলেনি ইন্টারভিউতে তা জানতে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দাখিল হয়।গত সপ্তাহে এসএসসির তরফে উচ্চপ্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে মেধাতালিকা প্রকাশিত করা হয়। গত সপ্তাহে তা আদালতের কাছে জমা পড়ে।এই তালিকা দেখে সন্তুষ্ট হয় হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ। অন্তবর্তী স্তগিতাদেশ প্রত্যাহার করে দ্রুত শিক্ষক নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট এর সিঙ্গেল বেঞ্চ।গত সপ্তাহে সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশিকা কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে দাখিল হয়েছে আপিল পিটিশন। আজ হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং সৌগত ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি চলে । এরেই মধ্যে বিক্ষুব্ধ চাকরি প্রার্থীরা সল্টলেকের এসএসসি ভবনে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া শুরু করেছেন।আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ উচ্চপ্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে অন্তবর্তী স্থগিতাদেশ জারি করে থাকে। ইন্টারভিউ চলাকালীন অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারিতে বিপাকে রাজ্য সরকার। তবে ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে – ‘ ইন্টারভিউ চলবে, তবে কারও নিয়োগ করা যাবেনা ‘।
Be First to Comment