গোপাল দেবনাথ : কলকাতা, ১৮ জানুয়ারি ২০২২। এই বিশ্বে বেড়াতে ভালোবাসেন না এই ধরণের মানুষ খুঁজে পাওয়া দুস্কর বলা যেতে পারে। একটা সময় ছিল সাধারণ মানুষ পায়ে হেঁটে হেঁটে ভ্রমণ করতেন। বেশিরভাগ ভ্রমণ সম্ভব হতো দেশের মধ্যে। সময়ের সাথে সাথে বিশ্ব এখন হাতের তালুর মধ্যে। বিদেশ ভ্রমণ এখন জলভাত। গত ২০১৯ এ চীন দেশ থেকে শুরু হওয়া করোনা অতিমারী মানুষের জীবন ও জীবিকা ওলট পালট করে দিয়েছে। যদি খোঁজ নিয়ে দেখা যায় তবে দেখা যাবে হোটেল ও ভ্রমণ সম্বন্ধীয় ব্যবসা এই বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
করোনাকালীন সময় থেকে বহুদিন দিন বন্ধ ছিল হোটেল সহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান। বাতিল করতে হয়েছিল সাধারন মানুষের ঘোরার পরিকল্পনা। বেশ বড় রকমই ধাক্কার সম্মুখীন হয়েছিল ট্যুরিজম ব্যবসা। এই প্রতিবেদকও সরকারি নিয়মের জালে বাধ্য হয়ে কেদারনাথ ভ্রমণের পরিকল্পনা বাতিল করতে বাধ্য হয়েছিল।
লকডাউন এর পর ধীরে ধীরে ট্যুরিজম ব্যবসা কিছুটা মসৃণ হলেও করোনা কালের আগের মতো লাভের মুখ দেখতে পারছেন না হোটেল ও ট্যুরিজম ব্যবসার সাথে যুক্ত মানুষরা।
ইস্টার্ন ইন্ডিয়া হোটেলিয়ার্স এন্ড ট্রাভেল এজেন্টস্ অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে আজ ১৮ জানুয়ারি কলকাতা প্রেস ক্লাবে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বিভিন্ন বক্তাদের কথায় এমনই কথা শোনা গেছে।
উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে এই সংস্থার সাধারণ সম্পাদক দেব কুমার চৌধুরী বলেন পর্যটন শিল্পের সাথে যেমন যুক্ত রয়েছে হোটেল তেমনই যুক্ত রয়েছে এলাকার মানুষ। গ্রামীণ অর্থনীতি অনেকটাই নির্ভর করে রয়েছে এই পর্যটন শিল্পের উপর। অতি সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গে করোনার যে নানাবিধ বিধি নিষেধ চলছে তার ফলে ট্যুরিজম ব্যবসা অনেকটাই পিছিয়ে যাচ্ছে। সরকারি তরফ থেকে বহু ক্ষেত্রে জীবন ও জীবিকার কথা ভেবে ছাড় দেওয়া হয়েছে, সেই জন্য তারা দাবি করেন এই ট্যুরিজম ব্যবসাতেও ছাড় ঘোষণা করা হোক সরকারের পক্ষ থেকে।
করোনা পরিস্থিতিতে সরকারের পক্ষ থেকে বহু ক্ষেত্রে বিশেষ ছাড় ঘোষণা করলেও পর্যটন শিল্পের জন্য কোনো প্রকার সাহায্যের প্যাকেজ আজও আসেনি। এই অভিযোগ করেন সংগঠনের আধিকারিকরা।
সাংবাদিক সম্মেলন থেকে তারা জানান বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে তারা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন । তাদের মূল দাবির মধ্যে রয়েছে:
৫০% মানুষ নিয়ে লঞ্চ, লাক্সারি বাস, হোটেল- টুরিস্ট যানবাহন শুরু করা হোক।
সরকারের পক্ষ থেকে একটি ফিনান্সিয়াল প্যাকেজ ঘোষণা করা হোক ট্যুরিজম ব্যবসার দিকে তাকিয়ে।
ডুয়ার্সে জঙ্গল সাফারি এবং সুন্দরবন অঞ্চলে আবার পর্যটনশিল্পকে শুরু করা হোক ৫০ শতাংশ ভ্রমণ পিপাসু মানুষদের নিয়ে।
বর্তমানে যে রাত্রিকালীন নিষেধাজ্ঞা চলছে তাতে ট্যুরিস্ট সম্বন্ধীয় যানবাহনকে ছাড় দেওয়া হোক।
সরকারি পক্ষ থেকে যে সমস্ত নথিভূক্ত পর্যটন অ্যাসোসিয়েশন রয়েছে তাদের নিয়ে একটি বৈঠক আয়োজন করা হোক যাতে পর্যটনশিল্পকে আরো ভালো ভাবে গড়ে তোলা যায় ।
সংস্থার যুগ্ম-সম্পাদক দিব্যেন্দু চক্রবর্তী বলেন , বাসে ট্রামে যেভাবে মানুষ যাচ্ছেন এবং যেভাবে সব জায়গায় করোনা বিধিমালা হচ্ছে ট্যুরিজম ব্যবসাকে খুলে সেই ভাবেই যাতে সব কিছু করা হোক। পর্যটন ব্যবসার সাথে যুক্ত বিভিন্ন সংস্থা গুলি যাতে এক ছাতার তলায় আসে তার কথা বলেন দীপেন্দু বাবু।
পর্যটন শিল্পে যদি এই ধরনের পতন দীর্ঘদিন চলতে থাকে এবং সরকার যদি কর্ণপাত না করেন তার জন্য আগামী দিনে তারা বৃহত্তর আন্দোলনের দিকে যাবেন বলেও জানান তারা ।
Be First to Comment