মধুমিতা শাস্ত্রী: ৩০জুন,২০২০। ঘাড়ের ওপর নিশ্বাস ফেলছে দুই শত্রু চীন ও পাকিস্তান। এই পরিস্থিতির মধ্যেই ভারত পেতে চলেছে বহু প্রতিক্ষিত রাফাল যুদ্ধ বিমানের প্রথম কিস্তির ৬টি বিমান। যা আগামী ২৭ শে জুলাইয়ের আগেই চলে আসবে ভারতের হাতে। এই ৬টি বিমানকে রাখা হবে আম্বালার আর্মি এয়ার বেসে। যার ফলে পাকিস্তান চলে আসবে যুদ্ধ বিমানটির ৬ মিনিটের দূরত্বে আর চীন ১৫ মিনিটের দূরত্বে।
গত ২০১৬ সালে ফ্রান্সের সঙ্গে ৫৮ হাজার কোটি টাকায় ৩৬ টি রাফাল যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তি হয়েছিল ভারতের সঙ্গে। এই চুক্তি নিয়ে বিরোধীরা অভিযোগের আঙুলও তুলেছিল মোদী সরকারের বিরুদ্ধে। সেই চুক্তির ৩৬ টি বিমানের মধ্যে ৬টি আসতে চলছে এবার। সেনাকর্তাদের মতে রাফালের আগমনে ভারতীয় বায়ুসেনার শক্তি এক লাফে অনেকটাই বেড়ে যাবে। কী আছে এই রাফাল বিমানে?
আসুন একনজরে দেখে নেওয়া যাক এই রাফাল যুদ্ধ বিমানের বৈশিষ্ট্যগুলি কী। রাফাল যুদ্ধ বিমানের সবচেয়ে বড় যে বৈশিষ্ট্যটি আছে, তা হলো প্রতিবেশী দেশের সীমান্ত অতিক্রম না করেই আকাশ থেকে নির্ভুল লক্ষ্যে আঘাত হানতে পারবে।
এতে স্ক্যাল্প নামে একটি দূর পাল্লার ‘আকাশ থেকে মাটি’ ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। যার পাল্লা ৩০০ কিলোমিটার। অর্থাৎ ৩০০ কিলোমিটার দূর থেকে এটি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম এবং বলা হচ্ছে যে এর লক্ষ্যভেদের ক্ষমতা অত্যন্ত নিখুঁত।
অর্থাৎ ভবিষ্যতে বালাকোটের মতো কোনো এয়ার স্ট্রাইকের প্রয়োজন পড়লে ভারতীয় বিমানকে শত্রুদেশের আকাশ সীমানায় ঢুকতেই হবে না। আমাদের দেশ থেকেই লক্ষ্যভেদ করা সম্ভব হবে। এছাড়া এতে রয়েছ ‘মেটিওর’ নামে আরও একটি মিসাইল।
এটি আকাশ থেকে আাকাশ ক্ষেপণাস্ত্র। শত্রুপক্ষের উড়ন্ত বিমানকে ঘায়েল করতে এটি কাজে লাগানো হয়। এই মিসাইলের বিশেষত্ব হলো যে, এটি চোখে দেখা যাচ্ছে না এমন লক্ষ্যেও আঘাত হানতে সক্ষম। এটির পাল্লা হলো ১০০ কিলোমিটার আর লক্ষ্যবস্তু যদি ৬০ কিলোমিটারের মধ্যে থাকে তবে লক্ষ্যভেদ একশ শতাংশ নিশ্চিত।
এছাড়া এই যুদ্ধ বিমানটি পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম। রয়েছে অত্যাধুনিক কামান। যা থেকে একবারে ১২৫ট গুলি বেরোতে পারে। এই বিমানটি ৬০ হাজার ফুট পর্যন্ত ওপরে উঠতে পারে। এই বিমানের এমন ক্ষমতা আছে যাতে সহজেই শত্রুপক্ষের র্যাডারকে ফাঁকি দিতে পারবে। অর্থাৎ শত্রুপক্ষের র্যাডার এই বিমানকে খুঁজেই পাবে না।
বিভীষণ পুত্র মেঘনাদ ইন্দ্রজিতের মতোই নিজেকে অন্তরালে রেখে শত্রুকে ঘায়েল করার বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে এই বিমানের। এতে রয়েছে ইনফ্রা রেড সার্চ অ্যান্ড ট্রাকিং সিস্টেম। রাতের অন্ধকারেও শত্রুপক্ষের শিবিরগুলি খুঁজে বের করতে অসুবিধা হবে না।
এর ইজেকশান সিস্টেমও অত্যন্ত উন্নত। অর্থাৎ বিমানটি বিপদে পড়লে এর পাইলট খুব সহজেই প্যারাসুটসহ বাইরে বেরিয়ে আসতে পারবে। বলা হচ্ছে, রাফালের মতো অত্যাধুনিক যুদ্ধ বিমান এই মুহূর্তে আর দ্বিতীয়টি নেই।
দ্বিতীয় দফায় যে রাফালগুলি পাওয়া যাবে সেগুলি পশ্চিমবঙ্গের হাসিমারা এয়ার বেসে রাখা হবে বলে জানা যাচ্ছে।
Be First to Comment