শ্রীজিৎ চট্টরাজ/ গোপাল দেবনাথ; কলকাতা, ১৭ মার্চ ২০২২। গত ৮ মার্চ ছিল আন্তর্জাতিক নারী দিবস। অথচ একবছর আগেও এই দিনে নতুন প্রজন্মের শিল্প উদ্যোগী ঐশ্বর্য বিশ্বাস জানতেন না, জীবনের সাফল্য তাঁকে এক সব পেয়েছির দেশে পৌঁছে দেবে। গত ১৬ মার্চ বুধবার বিকেলে আউলি লাইফ স্টাইল কনসালটেন্সিস এর কর্ণধার ঐশ্বর্য বিশ্বাস নিউটাউন বিশ্ববাংলা মোড় এর সন্নিকটে এক সাততারা হোটেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে মিলিত হয়ে জানালেন, নতুন প্রজন্মের একজন হিসেবে আয়ুর্বেদিক ত্বক প্রসাধনীর কিছু উৎপাদন নিয়ে ২০১৭ সালে বাজারে এসেছি। সংস্থার প্রায় ৮০ শতাংশ নারীকর্মীদের নিয়ে আমার সংস্থা। উৎপাদিত পণ্যের গুণগত মানের জন্য ইতিমধ্যেই গ্রাহক আশীর্বাদ আমি প্রতিনিয়ত পেয়ে থাকি গোটা পূর্বাঞ্চল জুড়ে। প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ সহ আমেরিকা, ও সংযুক্ত আরবশাহীতেও আমাদের পণ্যের ইতিমধ্যেই যথেষ্ট চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে দরকার অনেক পুঁজির। তাই গতবছর আমি অসুস্থ অবস্থায় একটি বেসরকারি জনপ্রিয় চ্যানেলের রিয়েলিটি শো সার্ক ট্যাঙ্কস অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য আবেদন করি। সেই সময়ে আমার বিদেশ যাওয়ার একটা কাজ ছিল। কিন্তু কিছু সমস্যার জন্য যাওয়া হয়নি। একেই বলে যোগাযোগ। টেলিভিশন চ্যানেল থেকে ডাক আসে মুম্বাইতে অডিশনে যাওয়ার জন্য। আপনারা জানেন এই রিয়েলিটি শোয়ের বিশেষত্ব, আমার মত নয়া উদ্যোগীদের উৎসাহিত করে আর্থিক সহযোগিতা দিয়ে উদ্যোগীদের স্বপ্নকে সার্থক করার। এই অনুষ্ঠানে আসেন দেশের প্রতিষ্ঠিত শিল্পপতিরা। দিল্লিতে অনুষ্ঠিত অডিশনে যোগদান করেন প্রায় ৬৫ হাজার উদ্যোগী। এঁদের মধ্যে অডিশনে সুযোগ পাই ১৫ হাজার। শেষপর্যন্ত মনোনীত হই আমরা ২০০ আবেদনকারী। কলকাতা থেকে আমিই ছিলাম একমাত্র নারী পরিচালিত সংস্থার প্রতিনিধি।
আমার বেশ মনে আছে, গত বছর আমি সেপ্টেম্বরের শেষে গোয়াতে ছিলাম। আমাকে খবর পাঠানো হলো ৬ অক্টোবরের মধ্যে মুম্বাই পৌঁছনোর। আমার অনুষ্ঠানটি শুটিং হবে ৯ অক্টোবর। এই অনুষ্ঠানে আমার যোগদানের ব্যাপারে সংস্থার প্রতিটি কর্মীর আন্তরিক সহযোগিতা আমি জীবনে ভুলতে পারবো না।
ঐশ্বর্য বলেন, সত্যি বলতে কি আমি খুব নার্ভাস হয়ে পড়েছিলাম। কিন্তু সাধারণত আমি সহজে পিছু হটি না।অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন বেশ কয়েকজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। আমার প্রজেক্টটি ভালো লাগে নমিতা থাপারের। যিনি দেশের অন্যতম মহিলা শিল্পদ্যোগী। এমকিওর ফার্মাসিউটিক্যালস এর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর।
ঐশ্বর্য বিশ্বাস এখন শিল্পোদ্যোগী হিসেবে পরিচিত হলেও ২০০১ সালে ল্যাকমে সানন্দা তিলোত্তমা প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়েছিলেন। বিশ্বখ্যাত নিউ ইয়র্কের ফ্যাশন ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি সংস্থা থেকে ঐশ্বর্য ত্বক সৌন্দর্যের বিশেষজ্ঞ হিসেবে পাশ করেন। একজন সফল নারী উদ্যোগী নমিতা থাপারের মানসিক ও আর্থিক সাহায্য পেয়ে ঐশ্বর্য তাঁর সংস্থার পণ্য এখন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে দেওয়ার ব্যাপারে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছেন। আন্তর্জাতিক নারীবর্ষে ঐশ্বর্য বিশ্বাসের বক্তব্য, নিষ্ঠা ও অধ্যবসায় থাকলে জীবনের লক্ষ্যে পৌঁছোনোটা শুধু সময়ের অপেক্ষা।
Be First to Comment