স্মরণঃ বি শ্ব ক বি র বী ন্দ্র না থ ঠা কু র
বাবলু ভট্টাচার্য : জীবনের এমন কোন দিক নেই, যেখানে তিনি আলো ফেলেননি। যে আলোয় আজও প্রতিনিয়ত পথ খুঁজে ফেরে বাঙালি ও বিশ্ববাসী। যার রেখে যাওয়া অনন্ত-অপার স্ফুলিঙ্গ ধরে আজও পথ চলতে হয় আমাদের, তিনি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর— বাংলা সাহিত্য ও কাব্যগীতির শ্রেষ্ঠ কারিগর।
আজ ২২ শে শ্রাবণ। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রয়াণ দিবস। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর রচনায় বাঙালির যাপিতজীবন, ইতিহাস-ঐতিহ্য- সংস্কৃতিকে যেমন মেলে ধরেছেন, তেমনি বাঙালির চিরদিনের হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনারও রূপকার তিনি। তিনি প্রেম, প্রকৃতি আর জীবনের প্রতি বাঙালির বোধকে আধুনিকতার পরশে বর্ণময় ও বহুমাত্রিকতায় ভরে দিয়ে গেছেন।
এক জীবনে বিচরণ করেছেন সাহিত্যের প্রায় সকল শাখায়। মানুষের এমন কোন মানবিক অনুভূতিও নেই— যা রবীন্দ্রনাথের লেখায় পাওয়া যায় না।
বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্য লালিত দর্শন ও সাহিত্য রবীন্দ্র-রচনার মধ্য দিয়ে বিশ্বসাহিত্য সভায় পরিচিতি পায়। বাংলা ভাষা ও বাঙালির সাহিত্য-সংস্কৃতি বিশ্বজনীন হয়ে উঠেছে তার মধ্য দিয়ে। তার লেখা বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত ‘আমার সোনার বাংলা’ এই দেশের জাতীয় সংগীত জন গণ মন সর্বকালের সেরা সঙ্গীত হিসেবে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত। তিনিই একমাত্র ব্যক্তি— যিনি বাংলাদেশ ও ভারত অর্থাৎ দুই দেশের জাতীয় সঙ্গীতের রচয়িতা।
বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অনেক কিছুরই তিনিই প্রথম স্রষ্টা। তাঁর হাত ধরেই বাংলা সাহিত্য বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়ায়, লাভ করে নতুন রূপ। বাংলা গদ্যের আধুনিকায়নের পথিকৃৎ রবিঠাকুর। ছোটগল্পেরও জনক তিনি।
গল্পে, উপন্যাসে, কবিতায়, প্রবন্ধে, নতুন সুরে ও বিচিত্র গানের বাণীতে, অসাধারণ সব দার্শনিক চিন্তাসমৃদ্ধ প্রবন্ধে, সমাজ ও রাষ্ট্রনীতিসংলগ্ন গভীর জীবনবাদী চিন্তাজাগানিয়া অজস্র এমনকি চিত্রকলায়ও সর্বত্রই রবীন্দ্রনাথ চির নবীন।
‘গীতাঞ্জলী’’ কাব্যগ্রন্থের মাধ্যমে তিনি প্রথম এশীয় হিসেবে ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯৪১ সালের আজকের দিনে ২২শে শ্রাবণ কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে পরলোকগমন করেন।
Be First to Comment