ইন্দ্রজিৎ আইচ : ২৬ আগস্ট ২০২১। অষ্টদশ থেকে বিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগ -এই দুই শতক বাংলার নবজাগরণের শতক। এরই মধ্যভাগে ১৮৭১ সালের ৭ ই আগস্ট জোড়াসাঁকো ঠাকুর বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি ছিলেন প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুরের কনিষ্ঠ পুত্র গিরিন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছেলে গুনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের তৃতীয় তথা ছোটো ছেলে ।
এই বাংলার নবজাগরণের সংস্কৃতির প্রায় প্রতিটি ধারায় যাঁর আধুনিক সৃজনশীলতায় পরিপূর্ণতা লাভ করেছিল তিনি হলেন অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর। শুধুমাত্র চিত্রশিল্পের আধুনিক ভাষাই নয়, শিশু সাহিত্য, ছড়াগান, যাত্রাপালা
এই সমস্ত ক্ষেত্রে তিনি রেখে গেছেন তাঁর সৃজনশীল উপাদানের রত্নভান্ডার। গত ৭ ই আগস্ট আমরা পদার্পন করেছি এই মহান স্রষ্টার জন্ম সার্ধশত বর্ষে। এইদিন অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাবা গুনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের কোন্নগরের বাগান বাড়িতে শিল্পীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের আয়োজন করা হয়েছিলো এই অনুষ্ঠানের মূল উদ্যোক্তা ছিলেন সর্বভারতীয় সংগীত ও সংস্কৃতি পরিষদ, কোন্নগর পৌরসভা ও কোন্নগর আর্টিস্ট ফোরাম। এই বিশেষ দিনটিকে স্বরণীয় করে রাখতে “বাংলার শিল্প দিবস” বা “Bengal art Day” হিসেবে ঘোষণা করার প্রস্তাব পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তথা রাজ্যের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর কাছে পৌঁছে দেবার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সর্বভারতীয় সংগীত ও সংস্কৃতি পরিষদ। সেই উপলক্ষে গত ২২ শে আগস্ট এক শিল্প শিবিরের আয়োজন করা হয় অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কোন্নগড় বাগানবাড়িতে পরিষদের ব্যাবস্থাপনায়। এর সাথে যৌথ উদ্যোগে ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ নৃত্য-নাটক-সংগীত ও দৃশ্যকলা একাডেমী, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। সহযোগিতায় আছে কোন্নগর পৌরসভা দক্ষিণবঙ্গ, কলকাতা ও হুগলি সহ বিভিন্ন জেলা থেকে বাছাই করা ৫৭ জন শিল্পীকে এই শিবিরে উপস্থিত ছিলেন, সরকারি সব রকম নিয়ম ও কোভিড বিধি মেনে এই শিল্পশিবির পরিচালনা করা হয়। সেদিন এই অনুষ্ঠানের শুরুতে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গলায় মাল্যদান করে এই অনুষ্ঠান শুরু হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সর্বভারতীয় পরিষদের সম্পাদক কাজল সেনগুপ্ত, পরিষদের সহ সম্পাদক শান্তনু সেনগুপ্ত, বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী সুব্রত গঙ্গোপাধ্যায়। কোন্নগর পৌরসভার পক্ষে তন্ময় দেব।
এই শিবির উদ্বোধন করেন বিখ্যাত চিত্রশিল্পী সুব্রত গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি তার ভাষণে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাজ এবং “বেঙ্গল আর্ট ডে” এই বিশেষ দিনটার কথা স্মরণ করিয়ে দেন। সর্বভারতীয় পরিষদের সম্পাদক কাজল সেনগুপ্ত বলেন বাংলার নবজাগরণের সংস্কৃতিতে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদানের কথা এবং তার জন্মের সার্ধশত বর্ষে “বাংলার শিল্প দিবস” এর গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন চিত্রশিল্পী জয়দীপ চট্টোপাধ্যায়। সর্বভারতীয় পরিষদের এই উদ্যোগ কে সাধুবাদ ও শুভেছা জানিয়েছেন বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী ওয়াসিম কাপুর, শিক্ষাবিদ ডঃপবিত্র সরকার এবং চিত্র পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়।
যে ৫৭ জন শিল্পী এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং বাংলার শিল্প দিবস এর স্বারক লিপি তে সই করেছেন
তারা হলেন সৌরভ ঘোষ, প্রবীর কুমার ঘোষ, কিশোর মল্লিক, সৌগত সরকার, বাপ্পাদিত্য দাস, শঙ্কর তরফদার, অন্নয় দে, পম্পা নন্দী, বাণী মাধব সরকার, অনুসূয়া চক্রবর্তী, সায়ন্তী কুমার, রেশমা খাতুন, সুশান্ত সরকার, দেবাশীষ পাল, কাঞ্চন মিস্ত্রি, সমীর কর্মকার, কৃষ্ণ। দে, বিশ্বনাথ দাস, রামানুজ বিশ্বাস, বিকাশ চৌধুরী, উদয় রাজ কোহর,
তমাল কর্মকার, বিকাশ হালদার, লাল্টু বোস, দেবদূত বিশ্বাস, বিনয় দোলুই, সংযুক্তা ভট্টাচার্য , রিন্টু রায় চৌধুরী, অমিত ভট্টাচার্য, সুভানিতা কর, জয়দীপ চট্টোপাধ্যায়, নির্মল কুমার মল্লিক, সঞ্জয় চক্রবর্তী, সজল কান্তি মিত্র, অরূপ রতন চৌধুরী, তাপস গঙ্গোপাধ্যায়, মলয় দাস, সুমন নন্দী, তুহিন ঘোষ, এলা সরকার, অরুণাভ ভট্টাচার্য, সোমনাথ চক্রবর্তী, তপন কর, পুস্পেন নিয়োগী, দিলীপ মাইতি, অয়ন কুন্ডু, অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়, অমিতাভ দত্ত, চন্দ্রবল মুখোপাধ্যায়, হরিদাস ঘোষ, প্রদীপ সুর, মানস মোহন ভৌমিক, তপন বর্মন , ইন্দ্রনীল ঘোষ, অরুনাখো ভট্টাচার্য, জ্যোতিপ্রকাশ রায় চৌধুরী এবং ইন্দ্রজিৎ নারায়ণ।
Be First to Comment