Press "Enter" to skip to content

অনেক সৃষ্টির মধ্যে ডুনাট এর রেডক্রস প্রতিষ্ঠা সবচেয়ে বড় অবদান; এই জন্য তিনি ১৯০১ সালে সর্বপ্রথম শান্তিতে নোবেল পুরস্কার প্রাপ্ত হন…..।

Last updated on May 9, 2022

Spread the love

জন্মদিনে স্মরণঃ জি ন হে ন রি ডু না ট

বাবলু ভট্টাচার্য : ‘আমরা কী পারি না এমন একটি সংগঠন গড়ে তুলতে- যে সংগঠনের কাজই হবে যুদ্ধে আহত সৈন্যদের নিরপেক্ষ ভাবে সেবা দান করা’— এই আকুতিটি যার, তার নাম জিন হেনরি ডুনান্ট।

ডুনান্ট ১৮৫৯ সালে ফ্রান্স-অস্ট্রিয়া যুদ্ধের ভয়াবহ করুণ পরিণতি প্রত্যক্ষ করে ভবিষ্যতের যুদ্ধে নিরীহ আহত সৈন্যদের সেবা দান নিশ্চিতকরণ, তথা মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই আবেদনটি করেছিলেন। ১৮৬২ সালে প্রচারিত ডুনান্টের আহ্বানের প্রেক্ষিতেই ১৮৬৩ সালে ‘রেড ক্রস’ প্রতিষ্ঠা লাভ করে।

মানবতাবোধ, নিরপেক্ষতা, স্বাধীনতা, পক্ষপাতহীনতা, স্বেচ্ছামূলক সেবা, একতা ও সার্বজনীনতা— এই সাতটি মূলনীতি ঘিরেই রেড ক্রসের সকল কর্মতৎপরতা শুরু হয়।

মূলত যুদ্ধাহত সৈন্যদের সেবাদানের ব্রত নিয়ে রেড ক্রসের জন্ম হলেও জেনেভা কনভেনশনের বিস্তৃত কার্যক্রম, দুস্থ সাধারণ লোকের স্বাস্থ্য সেবা, ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা, দারিদ্র্য মোচন, যুব নেতৃত্ব গঠন, নারীর ক্ষমতায়ন, দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাস, গণসচেতনা বৃদ্ধি, সমাজ উন্নয়নসহ বিভিন্ন দেশের প্রয়োজন অনুযায়ী কার্যক্রম গ্রহণ করায় রেড ক্রসের কার্যক্রমের পরিধি অনেক ব্যাপকতা লাভ করেছে— উপকারভোগীদের সংখ্যাও অনেক অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।

১৬টি দেশ নিয়ে রেড ক্রস তার যাত্রা শুরু করলেও রেড ক্রস বা রেড ক্রিসেন্টের বর্তমান সদস্য সংখ্যা ১৮৮ এবং বর্তমানে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ স্বেচ্ছাসেবী মানবতাবাদী প্রতিষ্ঠান হিসেবে সু-প্রতিষ্ঠিত। পৃথিবীজুড়ে প্রায় ৯৮ মিলিয়ন সমান সংখ্যক নিবেদিত নারীপুরুষ স্বেচ্ছাসেবক সম্পৃক্ত রয়েছে রেড ক্রসের সঙ্গে। রেড ক্রস একত্রিত করেছে সাদা-কালো, হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ- খ্রিস্টান, এশিয়া-আফ্রিকা-ইউরোপ- আমেরিকা ও ধনী-গরীবকে।

রেডক্রস তার সফল মানবিক কর্মকাণ্ডের জন্য ১৯১৭, ১৯৪৪ ও ১৯৬৩ সালে নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তও হয়েছে।

এই রেড ক্রসের প্রতিষ্ঠাতা যিনি, তার নাম ‘জিন হেনরি ডুনান্ট’। ডুনান্ট ১৮২৮ সালে ৮ মে সুইজারল্যান্ডের জেনেভা শহরের একটি সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি YMCAসহ ছোট-বড় অনেক প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠার সঙ্গে জড়িত। ছেলেবেলা থেকেই ডুনান্ট মানবদরদী চরিত্রের অধিকারী ছিলেন। তার পারিবারিক পরিমণ্ডলও ছিল মানবসেবার অনুকূলে।

ডুনান্টের বাবা জিন জ্যাকুয়েস ডুনান্ট কাউন্সিল সভা ও ব্যবসায়ী চেম্বার সদস্য ছিলেন। অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলে-মেয়েদের কল্যাণে কাজ করা, গরিবদের সহায়তা করা ও জেলখানা পরিদর্শন করা বাবার দায়িত্ব ছিল। এই সূত্রে ডুনান্ট ১৮ বছর বয়সেই বাবার সঙ্গে প্রতি সপ্তাহে জেলখানায় গরিব ও অনুতাপকারী কয়েদীদের দেখতে যেতেন ও তাদের জন্য কাজ করার সুযোগ পান।

মা এ্যানীএন্টনি ফ্রান্সের বিখ্যাত কোলাডন পরিবারের সদস্য ছিলেন। ডুনান্ট এর নানা হেনরী কোলাডন ছিলেন জেনেভার একটি বিখ্যাত হাসপাতালের পরিচালক ও পার্লামেন্ট সদস্য।

১৯১০ সালের ৩০ অক্টোবর ৮৩ বছর বয়সে সুইজারল্যান্ডের হেইডেনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

ছোট-বড় অনেক সৃষ্টির মধ্যে রেডক্রস প্রতিষ্ঠা তার সবচেয়ে বড় অবদান; এই জন্য তিনি ১৯০১ সালে সর্বপ্রথম শান্তিতে নোবেল পুরস্কার প্রাপ্ত হন।

প্রতি বছর তার জন্মদিন ৮ মে ‘বিশ্ব রেড ক্রস/রেড ক্রিসেন্ট দিবস’ হিসাবে পালন করা হয়।

More from GeneralMore posts in General »
More from InternationalMore posts in International »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Mission News Theme by Compete Themes.