নিজস্ব প্রতিনিধি : ৩১, জানুয়ারি, ২০২১। কিংবদন্তি তবলাশিল্পী রাধাকান্ত নন্দীর স্মৃতিতে গড়ে উঠেছে ‘রাধাকান্ত নন্দী ইনস্টিটিউট অফ কালচার’। দেখতে দেখতে ২৯ বছর পূর্ণ করলো। তাঁর সুযোগ্য শিষ্য কালিদাস নন্দী এই প্রতিষ্ঠানের একজন সংগঠক ও প্রতিষ্ঠাতা। উনষাটের শুরুতে ধর্মতলার সুরশ্রী অর্কেস্ট্রার রিহার্সাল রুমে কাকা রাধাকান্ত তাঁকে তবলা শিক্ষা দেন। বেনারসি বাজ ও বরিশালের অভিনব মিশেল রাধাকান্তর বৈশিষ্ট্য ; তা অনুসরণ করে কালিদাস তাঁর শিক্ষা সমৃদ্ধি করেন কিরানা ঘরের পণ্ডিত জয়চাঁদ ভাট ও গোপাল মল্লিকের কাছে।

সুরশ্রী অর্কেস্ট্রার মহড়ায় প্রতিদিনই আসতেন রাজেন সরকার, অনিল বাগচী, রবিন চট্টোপাধ্যায়, অলোকনাথ দের মতো খ্যাতনামা সুরকার ও যন্ত্রসঙ্গীত শিল্পী-বাজিয়েরা। পরে পেশাদার তবলাবাদক কালিদাস অভিনেত্রী সঙ্ঘের সঙ্গে যুক্ত হন। তবলা বাজিয়েছেন শ্যামল মিত্র, প্রসূন বন্দোপাধ্যায়, সবিতাব্রত দত্ত, নির্মলেন্দু চৌধুরী, ফিরোজা বেগম, শক্তি ঠাকুর, মীনা ব্যানার্জি, সৈকত মিত্র প্রমুখ শিল্পীর সঙ্গে। ‘বিবেকানন্দ’ নাটকে সুরারোপ করেছেন। কালিদাস জানালেন তিনি প্রথম যাত্রাপালায় আবহ সঙ্গীত আরোপ করেন। ‘রাধাকান্ত নন্দী ইনস্টিটিউট অফ কালচার’ ইতিমধ্যে কলকাতার মহাজাতি সদন,আশুতোষ মঞ্চ সহ বিভিন্ন জেলার নামি মঞ্চে তাদের অনুষ্ঠান করেছে। আগামী ২৩ মে রাধাকান্ত নন্দীর ৯২ তম জন্মদিন। স্মরণে বরণে সঙ্গীত ও তালবাদ্যে উদ্ যাপিত হবে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা। উপস্থিত থাকবেন সঙ্গীত ব্যক্তিত্ব, সাহিত্যিক ও গুণীজন। সূচনাপর্বে সঙ্গীত পরিবেশন করবেন কলকাতার পরিচিত শিল্পীরা। এরপর হুগলি জেলার বলাগড় অঞ্চলের সফল ছাত্রছাত্রীদের মঞ্চে এনে পুরস্কার প্রদান করা হবে। পরে এরাই আবার নাচ,গান, তালবাদ্য ও অভিনয়ে অংশ নেবে। শেষে ‘রাধাকান্ত নন্দী ইনস্টিটিউট অফ কালচার’ উপহার দেবে একটি বর্ণময় অনুষ্ঠান ‘ছন্দমালা’।

পরিচালনায় কালিদাস নন্দী। জেলা ভিত্তিক গান-বাজনার ইনস্টিটিউট (শাঁখা) গড়ে তোলার লক্ষ্যে নতুন প্রতিভা অন্বেষণের দিকে বিশেষ জোর দিচ্ছে প্রতিষ্ঠান। গানের পাশাপাশি আনদ্ধবাদ্য, নাটক, যাত্রাভিনয় ইত্যাদিতে কুশলী ছেলেমেয়েদের কলকাতার নামি অডিটোরিয়ামে শ্রোতাদের সামনে উপস্থিত করার সুযোগ এনে দিচ্ছে ইনস্টিটিউট। জানালেন জেলা সভাপতি গোপাল নন্দী। প্রশ্ন, জেলা ভিত্তিক এই উদ্যোগ কেন? উত্তরে কালিবাবু জানালেন গুরু রাধাকান্তর ঠেকা ও বাজ-এর যথার্থ প্রয়োগ বিশেষত আদ্ধা ঠেকা সম্পর্কে নতুন প্রজন্মকে শিক্ষাদান তথা ঘরানাকে বাঁচিয়ে রাখা।

পাশাপাশি লঘুসঙ্গীতে কিভাবে বাজাতে হবে তাও অবহিত করা। লক্ষ থাকবে গান, নাচ, অভিনয়, যাত্রা ইত্যাদি বিষয়ের প্রতিও। এবং এটি রক্ষিত হলেই জেনো আমার গুরুর প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে।

Be First to Comment