Press "Enter" to skip to content

সঙ্গীতের জগতে নিজেকে এক জন ‘ভার্সেটাইল’ শিল্পী হিসেবে প্রমাণ করেছিলেন সবিতা চৌধুরী…….।

Spread the love

জন্মদিনে স্মরণ : সবিতা চৌধুরী

বাবলু ভট্টাচার্য : স্বামী সলিল চৌধুরীর অনুরোধেই প্রথম গানের জগতে পা রাখা। এর পর কয়েক দশক ধরে বাংলা আধুনিক গানের শিল্পী হিসেবে একের পর এক জনপ্রিয় গান। সঙ্গীতের জগতে নিজেকে এক জন ‘ভার্সেটাইল’ শিল্পী হিসেবে প্রমাণ করেছিলেন সবিতা চৌধুরী। খ্যাতনামা শিল্পী হিসেবে সঙ্গীত জগতে সলিল-জায়ার জার্নিও বেশ অনেক বছরের।

তাঁর সঙ্গীত জগতে প্রবেশ নিয়ে বেশ কিছু কাহিনি রয়েছে। এক বার গোর্কি সদনে সলিল চৌধুরীর মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে সেই সব মুহূর্তের কিছু কথা নিজেই জানিয়েছিলেন শিল্পী। বলেছিলেন, তাঁর গান তোলা, রেওয়াজ— সবই নাকি হতো রান্না করতে করতে। সলিল চৌধুরী তাঁকে বলতেন, ভাল শিল্পী হতে গেলে ভাল রান্না জানতে হবে। তাই এক দিকে তিনি কড়াইয়ে নুন-মিষ্টি দিতেন, অন্য দিকে কম্পোজিশন চলত। বেশির ভাগ গান নাকি এভাবেই বেঁধেছেন সলিল চৌধুরী।

গানের জগতে আসার পাশাপাশি শিল্পীর বাংলা শেখার পিছনেও রয়েছে ভিন্ন গল্প।

বাংলার বাইরে থেকে বড় হওয়ার জেরে, বাংলা ভাষায় একেবারেই অদক্ষ ছিলেন সবিতা। সে কারণে তিনি বাংলা গান হিন্দি অক্ষরে লিখে গাইতেন। কিন্তু সমস্যায় পড়তেন রেকর্ডিং-এর সময়। কারণ, তাঁর গান ঠিক হত সবার শেষে।

স্টুডিওয় যখন পৌঁছতেন, দেখতেন, সলিল চৌধুরী হারমোনিয়াম নিয়ে বসে গান ঠিক করছেন। তাই আগে থেকে নিজের গান হিন্দিতে লিখে নিয়ে যাওয়ার উপায় সবিতার ছিল না। স্টুডিওয় বসেই গানের সুর পেতেন, কথা পেতেন।

কথা বলতে পারলেও, লেখা বা পড়ার মতো বাংলা জানা ছিল না সবিতার। তাই গানের জন্যই এক প্রকার বাধ্য হয়ে বাংলাটা শিখেছিলেন তিনি। যার-তার কাছে নয়, তাঁকে বাংলা ভাষার সঙ্গে পরিচয় করিয়েছিলেন সলিল চৌধুরীই।

বাংলায় ও হিন্দিতে অসংখ্য প্লে-ব্যাক করেছেন সবিতা। তাঁর বাংলা আধুনিক গানের মধ্যে : ‘ঝিলিমিলি ঝিলিমিলি’, ‘বিশ্ব পিতা তুমি হে প্রভু’, ‘মরি হায় গো হায়’, ‘ওরে মন গুনগুন’, ‘হলুদ গাঁদার ফুল’, ‘প্রজাপতি প্রজাপতি’, ‘সুরেরও এই ঝর ঝর ঝরনা’, ‘বৌ কথা কউ বলে পাখি আর ডাকিসনা’, ‘মার ঝাড়ু মার ঝাড়ু মেরে’– গানগুলি বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে।

তবে কোথাও যেন নিজেকে সীমাবদ্ধ করে রেখেছিলেন শিল্পী। তাঁর গুণমুগ্ধদের একাংশের মতে, সবিতা চৌধুরীর মধ্যে আরও সুর ছিল। ভারতীয় সঙ্গীতকে আরও অনেক কিছু দেওয়ার ছিল তাঁর।

২০১৭ সালের ২৮ জুনে সাবিতা চৌধুরীর ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ৭২ বছর বয়সে মারা যান।

সবিতা চৌধুরী ১৯৪৫ সালের আজকের দিনে (১৩ জুন) কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন।

More from GeneralMore posts in General »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *