Press "Enter" to skip to content

গাছ ও বন রক্ষার জন্য ‘চিপকো আন্দোলন’ – এ আন্দোলনের ভিত্তি রচিত হয় ১৭৩০ সালে…..

Spread the love

বাবলু ভট্টাচার্য: ঢাকা, বৈশ্বিক উষ্ণতা নিয়ে আন্দোলন এখন গোটা পৃথিবী জুড়েই হচ্ছে। তবে এর যাত্রা শুরু হয়েছিল অনেক আগে থেকেই। এমনই একটি পরিবেশবাদী আন্দোলন হল চিপকো আন্দোলন। গাছ ও বন রক্ষার জন্য গাছকে জড়িয়ে ধরে যে অহিংস আন্দোলন হয়েছিল তা-ই চিপকো আন্দোলন নামে পরিচিত। হিন্দিতে ‘চিপকো’ শব্দটির অর্থ ‘আলিঙ্গন করা’, আটকে থাকা। আর গাছকে আলিঙ্গন করার মধ্য দিয়ে এই আন্দোলনটি গড়ে উঠেছিলো বলে এর নাম ‘চিপকো আন্দোলন’। এ আন্দোলনের ভিত্তি রচিত হয় ১৭৩০ সালে। রাজস্থানের প্রত্যন্ত অঞ্চল খেজারিলি গ্রামে একটি রাজপ্রাসাদ গড়ার পরিকল্পনা করেছিলেন তৎকালীন মেওয়ারের রাজা। রাজার নাম ছিল অভয় সিং। রাজার নেতৃত্বেই শুরু হয় গাছ কাটা কর্মসূচী। আর এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান তিন সন্তানের মা অমৃতা দেবী। পরবর্তীতে তার সাথে যোগ দেয় গ্রামের বিষ্ণই সম্প্রদায়ের লোকেরাও।

তাদের উদ্দেশ্য একটাই– যে করেই হোক গ্রামের খেজরি গাছগুলোকে বাঁচাতে হবে। আর সেজন্য গাছের সাথে নিজেদের আটকে রেখে শুরু হয় এ আন্দোলনের প্রথম ধাপ। এভাবেই গাছকে জড়িয়ে ধরে রাখা অবস্থাতেই সৈন্যদের হাতে প্রাণ দিতে হয়েছিল তাদের। এরপর ১৯৬৩ সালে চীন-ভারত যুদ্ধের অবসানের পর ভারতের উত্তরাখন্ডে এই আন্দোলন আবার শুরু হয়। তখন উত্তরাঞ্চল, বিশেষত গ্রামীণ অঞ্চলগুলো, ব্যাপক উন্নতি করে। বিশেষ করে যুদ্ধের জন্য নির্মিত রাস্তাগুলো বিদেশি সংস্থাগুলোর বেশ নজর কাড়ছিল। যার ফলস্বরূপ সংস্থাগুলো চেয়েছিল ঐ অঞ্চলের বনজ সম্পদ দখল করতে। এই আন্দোলনটির সূত্রপাত হয় উত্তরাখণ্ডের চামেলি জেলায়, পরে তা দ্রুত ভারতের অন্যান্য অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৭৩ সালের ২৬ মার্চ উত্তরপ্রদেশ থেকে এই আন্দোলন কঠোর রূপ ধারণ করে। ১৯৭৪ সালে সরকার কর্তৃক ২,০০০ গাছ কাটা হলে বিক্ষোভ শুরু হয় এবং সুন্দরলাল বহুগুনা গ্রামে গ্রামে গিয়ে নারী, পুরুষ, ছাত্রদের এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে আহ্বান জানান। ১৯৭২-৭৯ সালের মধ্যে দেড় শতাধিক গ্রাম চিপকো আন্দোলনের সাথে জড়িত ছিল। চিপকো আন্দোলনের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হল মহিলা গ্রামবাসীর ব্যাপক অংশগ্রহণ।

এই অঞ্চলের কৃষির সাথে নারীরা যুক্ত থাকায় তারা এই বিক্ষোভে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছিল। এ আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলেন গৌড়া দেবী, সুদেশা দেবী, বাচ্চনি দেবী, চন্ডী প্রসাদ ভট্ট, ধুম সিং নেজি, শমসের সিং, গোবিন্দ সিং রাওয়াত প্রমুখ। নারী-পুরুষ উভয় লিঙ্গের কর্মীই আন্দোলনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছেন।

More from GeneralMore posts in General »

Be First to Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *